ভাবসম্প্রসারণ: নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস
নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস ভাবসম্প্রসারণ।
ভাবসম্প্রসারণ: নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।
লোভী মানুষের লোভের কখনো শেষ হয় না। লোভ চরিতার্থ হ’লেও তা আগুনের মতোই বৃদ্ধি পায়। সুখের প্রত্যাশী মানুষের সুখেরও তৃপ্তি হয় না; সে আরো সুখ চায়— আরো সুখ। কী পেলে যে তার সুখের নিবৃত্তি হবে তা মানুষ জানে না। আমাদের বিশ্বাস, বাঞ্ছিত ভোগের সামগ্রী হাতের নাগালে পেলেই মানুষ সুখী হয়।
ঈশ্বরের এই জগতে ঈশ্বর এবং মানুষ ভোগের জন্য কত সামগ্রীই সৃষ্টি করেছেন। সব যদি একজন ভোগী মানুষের হাতের নাগালে এনে দেওয়া হয়, তাও সুখ প্রত্যাশী মানুষটির মনে হবে, বিশ্ব সংসারে অন্য কোথাও আরো অনেক সুখের সামগ্রী, ভোগের সামগ্রী ছড়িয়ে আছে, যা তার হাতের নাগালে আসেনি, যা ভোগ করে সুখানুভূতি লাভ করা তার হয়ে ওঠেনি। তাই তার সুখ প্রত্যাশা এখনো চরিতার্থ নয়। এই ধরণের মানুষেরা মনে করে, তার থেকে সুখী মানুষ নিশ্চয় আছে, যে অনেক সুখ ভোগ করেছে। কিন্তু এটা সত্য না হ’তেও পারে।
একজন বিত্তবান মানুষ সুখী আর একজন দরিদ্র মানুষ দুঃখী—এটা মনে করা ঠিক নয়। সুখটা মনের ব্যাপার। কেউ যদি মনে করে, তার থেকে অন্য মানুষেরা সুখী, সে সুখী নয়, তাহলে কিছু করার নেই। আবার একজন দরিদ্র নির্লোভ বিলাস-বিমুখ মানুষ যদি মনে করে সে মহা সুখী, সেটাও মিথ্যা বলে মনে করা যায় না।
অধিকাংশ লোভী ও ভোগী মানুষের মনে হয়, তার চেয়ে অন্যেরা সুখী। আবার সেই অন্যেরাও হয়তো ভাবে, চরম সুখ তার কপালে জুটল না, অন্যেরাই সেই সুখ ভোগ করে নিল। এমনটা ভাবার পিছনে রয়েছে ঈর্ষা। লোভীদের মধ্যে ঈর্ষা থাকে। এই ঈর্ষা বশত মানুষ অন্যকে নিজের থেকে বেশি সুখী ভাবে এবং নিজেকে তুলনায় অসুখী ভেবে কষ্ট পায়।