তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাব।
ভূমিকাঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উত্তরকালে দ্বিমেরু বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিন জোট এবং সোভিয়েত জোটের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইকে প্রত্যক্ষ করেছিল বহুমাত্রিক ঠান্ডা লড়াইএর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিও। বাস্তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ান এই দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল এবং ফলত তৃতীয় বিশ্বভুক্ত দেশগুলি ঠান্ডা লড়াই’র মধ্যে সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল। প্রাথমিক পর্বে তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছিল –
- মধ্যপ্রাচ্যে,
- ভিয়েতনামে
- কোরিয়ায়।
![]() |
তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাব |
তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাবঃ
১৮৬৯ সালে সুয়েজ খাল তৈরী হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ও ভৌগোলিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়, বিংশ শতকে তেলের খনি আবিষ্কৃত হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন ইজরায়েল রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে এবং আরব ইজরায়েল দ্বন্দ্ব শুরু হলে মধ্য – প্রাচ্যের রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত মধ্য প্রাচ্যে ব্রিটিশ প্রাধান্য থাকলেও যুদ্ধান্তে গ্রেট ব্রিটেন মধ্য প্রাচ্য থেকে সরে আসে, ফলে একটা শূন্যস্থান তৈরী হয়। প্রথমদিকে মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে আগ্রহী না হলেও পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান সোভিয়েত আগ্রাসনের আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েন।
ভৌগোলিক এবং কৌশলগত কারণে ইওরোপের পরেই মধ্যপ্রাচ্যের স্থান নির্ধারিত হয়েছিল এবং আমেরিকা ইজরায়েলের সমর্থনে ভূমধ্যসাগরে ষষ্ঠ নৌবহর প্রেরণ করে এবং টুম্যান প্রশাসন ইজরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। পশ্চিমী জোট মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য গড়ে তোলে সেনটো নামক শক্তিজোট। শুরু হয় মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির খেলা।
প্রায় সমসাময়িক কালে নাসেরের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী মিশরের উত্থান পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলে। আরব ঐক্যের প্রতীক নাসের সুয়েজ খাল সংলগ্ন এলাকার উপর মিশরের চূড়ান্ত আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন যার ফলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ভীষন রকম চিন্তিত হয়ে পড়ে।
ব্রিটেন এবং ফ্রান্স মনে করেছিল যে নাসেরের আগ্রাসী কার্যকলাপ উপনিবেশগুলির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে এবং এই আশঙ্কায় ঐ দুই দেশ নাসেরের প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ করে। তেল পরিবহনের জন্য ব্রিটেন এবং ফ্রান্স সুয়েজ খালের উপর নিয়ন্ত্রন বজায় রাখতে চেয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ইজিপ্টের প্রতি সহানুভূতিশীল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাহায্যপ্রার্থী নাসেরকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে চাইলেও অর্থ সাহায্য দিতে চেয়েছিল নাসের প্রতিক্রিয়ায় সোভিয়েত ইউনিয়ানের কাছে অস্ত্রসাহায্য চাইলে মার্কিন – যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি মত মিশরের আওয়ান বাঁধের জন্য অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দেয়। নামের সুয়েজ খাল জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নিলে সুয়েজ সংকট ঘণীভূত হয়ে ওঠে।
১৯৫৬ সালে ব্রিটিশ ও ফরাসী বাহিনী সুয়েজ খালের উপর অধিকার স্থাপন করার চেষ্টা করে, ইজরায়েলও সামরিক বাহিনী পাঠায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপে রাজী ছিল না, তারা অর্থনৈতিক অবরোধ জারি করতে চেয়েছিল। আমেরিকার চাপে ব্রিটেন ও ফ্রান্স যুদ্ধ বিরতি মেনে নেয় এবং পশ্চিমী জোটের মধ্যে মতদ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠে। এর ফলে আরব দুনিয়ায় নাসেরের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং রাশিয়া সুযোগ বুঝে আরব অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে।
১৯৫৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার তার ডকট্রিন ঘোষণা করে বলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের যে কোন প্রান্তে রাজনৈতিক বিপদের মোকাবিলা করবে। মধ্যপ্রাচ্যের দক্ষিণপন্থী দেশগুলি, যেমন, লেবানন, জর্ডন এবং সৌদি আরব স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আইজেনহাওয়ার ডকট্রিনকে সমর্থন জানায়। অন্যদিকে নাসেরের সহযোগিতায় সোভিয়েত রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়। এইভাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি ঠান্ডা লড়াই ‘র প্রভাবধীন হয়ে পড়ে।
এশিয়ায় সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত ইন্দো-চীন বা ভিয়েতনাম ঠান্ডা যুদ্ধের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ফরাসী অধিকৃত ইন্দো-চীনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপানের নিয়ন্ত্রন স্থাপিত হয়েছিল এবং ঐ পর্বে হো চি মিনের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম শক্তিশালী হয়ে ওঠে হো চি মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামের গণ আন্দোলন জাপানী সেনাকে বিতাড়িত করে এবং ভিয়েতনামকে কার্যত স্বাধীন দেশ রূপে ঘোষনা করা হয়। এরপর পুনরায় ফরাসীরা ভিয়েতনামে অনুপ্রবেশ করলে হো চি মিনের নেতৃত্বে কমিউনিস্টরা গেরিলা পদ্ধতিতে সংগ্রাম শুরু করে এবং ১৯৫৪ সালে জেনেভা সম্মেলনে ফ্রান্স ভিয়েতনামকে স্বাধীনতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছিল যে ভিয়েতনামে জেনেভা সম্মেলনের মীমাংস মেনে সাধারণ নির্বাচন হলে হো চি মিনের নেতৃত্বে কমিউনিস্টদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে ফলে সমসাময়িক বিশ্বে আরও একটি স্বাধীন কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশের ভয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এবং অংশগ্রহণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও সাহায্যে দক্ষিণ ভিয়েতনামে বাও-দাইয়ের নেতৃত্বে একটি দক্ষিণপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই সরকার উত্তর ভিয়েতনামের হো চি মিনের নেতৃত্বাধীন চীন ও রাশিয়ার সাহায্যপুষ্ট কমিউনিস্ট সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এইভাবে ঠান্ডা যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব ভিয়েতনামের উপর পরে এবং ঐ দেশে কার্যত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাব পরেছিল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র কোরিয়ার উপরেও। ঊনবিংশ শতকের শেষ দিক থেকে রাশিয়া, চীন এবং জাপানের সাম্রাজ্যবাদী কার্যকলাপের কেন্দ্র কোরিয়া ১৯১০ থেকে জাপানের অধিকারে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মিত্রপক্ষ কোরিয়ার স্বাধীনতা প্রদানের বিষয়ে নানান আলাপ আলোচনা করে যদিও কোন সুস্পষ্ট গ্রহণযোগ্য মত এই বিষয়ে পাওয়া যায়নি। যুদ্ধান্তে পরাজিত জাপান উত্তর কোরিয়ার হাতে ক্ষমতা অর্পন করে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হাতে জাপান আত্মসমর্পন করে। ৩৮ ডিগ্রী অক্ষাংশ বরাবর উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সীমারেখা টানা হয়।
ঐতিহাসিক পিটার কালভোকুরেশি লিখেছেন যে ৩৮ ডিগ্রী অক্ষাংশ প্রশাসনিক কারণে তৈরী বিভাজন রেখা হলেও শীঘ্রই এই রেখা বৃহৎ শক্তিগুলির টানাপোড়েনে রাজনৈতিক রেখায় পরিণত হয়। মার্কিন যুদ্ধের উদ্যোগে ঠিক হয় যে জাতিপুঞ্জের বাহিনীর উপস্থিতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই কোরিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করা হবে, উত্তর কোরিয়া এই নির্বাচনের বিরোধিতা করে এবং এর ফলে দক্ষিণের সরকারকেই কোরিয়ার বৈধ সরকার রূপে ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তর কোরিয়ার বাহিণি দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে এবং দখল নেয়।
জাতিপুঞ্জের বাহিনীকে নেতৃত্বে দিয়ে মার্কিন সেনাপতি জেনারেল ম্যাক আর্থার দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ার বাহিণীকে চীন সীমান্ত পর্যন্ত পশ্চাদাপসরণে বাধ্য করে। এর ফলে চীন উত্তর কোরিয়ার পক্ষ অবলম্বন করলে কোরিয়ার রাজনীতি আরও জটীল হয়ে ওঠে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামরিক ব্যূহের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ও অস্তিত্ব মার্কিন স্বার্থরক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে কোন মূল্যে উত্তর কোরিয়ার সম্প্রসারণকে রোধ করতে প্রয়াসী হয় এইভাবে কোরিয়াও হয়ে ওঠে ঠান্ডা যুদ্ধের রাজনৈতিক সংকটের অন্যতম কেন্দ্রে।
তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাব পড়েছিল লাতিন আমেরিকাতেও। ১৯৪৭ সালে রিওর সামরিক চুক্তির পরেই লাতিন আমেরিকার ২১টি রাষ্ট্র যৌথ রাজনৈতিক সংগঠন আমেরিকান রাষ্ট্রসংস্থা বা ‘Organisation of American States’ গড়ে তোলে এবং ঐ অঞ্চলে শান্তি রক্ষায় ব্রতী হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রিও চুক্তির প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করেছিল এবং কোরিয় যুদ্ধের সময় থেকেই রিপাবলিকান দল লাতিন আমেরিকাকে সাম্যবাদ বিরোধী বেষ্টনী নীতির অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছিল। ১৯৫১ সালে গুয়েতামালায় জ্যাকোবো গুজম্যান মার্কিন পুঁজি পরিচালিত ইউনাইটেড ফ্রুট কোম্পানীর অধিকারে থাকা ভূসম্পত্তিগুলি কৃষককূলের মধ্যে বণ্টনের প্রকল্প গ্রহণ করলে মার্কিন মদতপুষ্ট প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং নতুন সামরিক প্রশাসন ঐ ভূমিসংস্কারকে বাতিল করে দেয়।
লাতিন আমেরিকায় ঠান্ডা লড়াই’র সর্বাধিক বিরূপ প্রভাব পড়ে কিউবায় যেখানে ১৯৫৯ সালে মার্কিন সমর্থিত বাতিস্তা সরকার সাম্যবাদী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর বৈপ্লবিক অভ্যুত্থান ও জনরোষের ফলে উৎখাত হয়েছিল এবং তার জায়গায় কাস্ত্রো রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছিলেন।
১৯৬১ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি কেনেডি দক্ষিণ আমেরিকার অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা দূর করার জন্য ‘প্রগতির জন্য মিত্রতা’ বা ‘Alliance for Progress‘ গ্রহণ করেন এবং দশ বছরের অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচিতে ২০ বিলিয়ান ডলার সাহায্য ঘোষণা করেন। লাতিন আমেরিকার অন্য কুড়িটি রাষ্ট্র মেনে নিলেও কাস্ত্রোর কিউবা তা মানল না। মার্কিন পুঁজির অধিকারে থাকা কিউবার প্রধান শিল্প চিনি উৎপাদন কেন্দ্রগুলিকে অধিকার করা হল, মার্কিন অধিকৃত শিল্পকেন্দ্র এবং ব্যাঙ্কগুলির জাতীয়করণ করা হল। ক্ষিপ্ত মার্কিন সরকার কিউবার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলে সোভিয়েত রাশিয়া কিউবার সরকারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে। রাশিয়া ২০০ মিলিয়ান ডলার আর্থিক ঋন পাঠায় এবং কিউবায় উৎপাদিত চিনির ৫০% কেনার সিদ্ধান্ত নেয়।
১৯৬১ সালে রাশিয়া থেকে কিউবায় সামরিক উপদেষ্টা, প্রযুক্তিবিদ এবং কূটনীতিবিদদের কিউবায় পাঠানো হয়, অন্যদিকে ঐ বছরই কেনেডি সরকার কাস্ত্রোকে উৎখাত করার জন্য ১৫০০ ভাড়াটে সৈন্য পাঠালে পিগ উপসাগরের যুদ্ধে কিউবার বাহিনী তাদের পরাস্ত করে। আশঙ্কিত কিউবাকে আশ্বস্ত করার জন্য রাশিয়া কিউবায় ৪৮ টি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র এবং আণবিক বোমারু বিমান পাঠায় এইভাবে লাতিন আমেরিকার কিউবাকে কেন্দ্র করে ঠান্ডা যুদ্ধের নিষ্ঠুর বাস্তবতা ও অস্থিরতা প্রকাশিত হয়।
আফ্রিকা মহাদেশের অনেক ক্ষুদ্র রাষ্ট্রেও ঠান্ডা লড়াই’র ছায়া পড়েছিল। কঙ্গোতে তাদের প্রতিনিধি জেনারেল জোসেফ মোরুতুকে ক্ষমতায় আনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেলজিয়াম সামরিক সাহায্য প্রদান করেছিল, পরে সোভিয়েত রাশিয়া মোবুতুর বিরুদ্ধে অ্যাঙ্গোলার অভিযানকারীদের সাহায্য প্রদান করেছিল।
অন্যদিকে স্বাধীনতা লাভের পর অ্যাঙ্গোলার প্রধান রাজনৈতিক দল পপুলার মুভমেন্ট ফর লিবারেশন অফ অ্যাঙ্গোলা বা ‘MPLA’ সমাজতান্ত্রিক হওয়ার অপরাধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে পছন্দ করত না এবং এই সরকারের বিরুদ্ধে ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্টকে বা ‘FNLA’কে সাহায্য করেছিল মোৰুতুও এই সাহায্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী হয়েছিলেন, অন্যদিকে রাশিয়া এবং কিউবা ‘MPLA’র জন্য সামরিক ও আর্থিক সাহায্য প্রেরণ করেছিল। কাজেই আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলিও স্বাধীনতার পর মহাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলির স্বার্থ সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল।
মূল্যায়ন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর দ্বিমেরুকরণের পৃথিবীতে ঠান্ডা যুদ্ধের এই নিষ্ঠুর অস্থিরতার আশঙ্কায় তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশ বাধ্য হয়েছিল জোট নিরপেক্ষ থাকতে জন্ম হয়েছিল জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের।
Anonymous
Thank you